আল- কুরআন বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা দেখুন
আল - কুরআনে বিজ্ঞান
আল - কুরআনে বিজ্ঞান (১ম পর্ব)
(কিন্তু এত বড় একটি নিদর্শন থাকা সত্ত্বেও) অতপর তোমাদের মন কঠিন হয়ে গেল, (এমন কঠিন) যেন তা (শক্ত) পাথর, (বরং মাঝে মাঝে মনে হয়) পাথরের চেয়েও (বুঝি তা) বেশি কঠিন ; (কেননা) কিছু পাথর এমন আছে যা থেকে (মাঝে মাঝে) ঝর্ণাধারা নির্গত হয়, আবার কোন কোন সময় তা বিদীর্ণ হয়ে ফেটেও যায় এবং তা থেকে পানিও বের হয়ে আসে, (অবশ্য) এর মধ্য থেকে (এমন কিছু পাথর আছে ) যা আল্লাহর ভয়ে কম্পিত হয়ে ভুপতিত হয়; আল্লাহ তাআলা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে মোটেও গাফেল নন ।
(সূরা : বাক্বারা, আয়াত : ৭৪)
এই আয়াতে আল্লাহ তিন প্রকার শিলার কথা উল্লেখ করেছেন :
এক প্রকারের মধ্য থেকে পানির ধারা প্রবাহিত হয়
আর এক প্রকার শিলার মধ্য থেকে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয় এবং
তৃতীয় প্রকার শিলা ভূত্বকের নীচে প্রোথিত থাকে ।
শিলা : ভূত্বক যেসকল উপাদান দ্বারা গঠিত তার সাধারণ নাম শিলা ।
উৎপত্তির উপর ভিত্তি করে শিলাসমূহকে প্রধান তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায় :
আগ্নেয় শিলা : গ্রানাইট, ব্যাসল্ট, ডোলোরাইট ইত্যাদি ।
পাললিক শিলা : বেলেপাথর, চুনাপাথর, কয়লা, সৈন্ধব লবণ ইত্যাদি ।
রূপান্তরিত শিলা : মার্বেল, স্লেট, নিস, গ্রাফাইট ইত্যাদি ।
আল - কুরআনে বিজ্ঞান (২য় পর্ব)
" তিনিই তোমাদেরকে দেখান বিজলী যা ভয় ও ভরসা সঞ্চার করে এবং তিনিই সৃষ্টি করেন ভারী মেঘ ;"
( সূরা : আর্ রা'দ, আয়াত : ১২ )
এই আয়াতে বিজলীর কথা বলা হয়েছে । যখন বিজলি চমকায় ঠিক তার পরই প্রচন্ড শব্দ শোনা যায় । তখন মানষের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি হয় । বিজলীর তীব্র আলোর ঝলক ভীতিকরভাবে চোখ ঝলসে দেয় এবং সাময়িকভাবে অন্ধ করে দিতে পারে । আবার পৃথিবী পৃষ্ঠের মধ্যে সংঘটিত বজ্র জীবন হানির কারণ ঘটায় এবং তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয় । এতে সম্পদের ক্ষয় ক্ষতি হয় । কারণ, বজ্রপাতের স্থলে প্রচন্ড তাপের জন্য চারপাশের সবকিছু পুড়ে যায় । এজন্যই বিজলী ভয়ের সঞ্চার করে ।
কিন্তু উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে ভয় ও ভরসার সঞ্চার করে । ভয়ের কথা বুঝতে পারলাম কিন্তু ভরসার সঞ্চার তাহলে কিভাবে হয় ? তাহলে শুনুন -
বজ্র বিদ্যুৎ বাতাসে অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনকে একত্র করে এবং নাইট্রোজেনের অক্সাইড গঠন করে । মাটিতে পড়া বৃষ্টির ফোঁটা এই অক্সাইড বহন করে নিয়ে আসে এবং দ্রবীভূত নাইট্রোজেন যৌগের আকারে গাছপালার জন্য নাইট্রোজেন সরবরাহ করে । এই নাইট্রোজেন উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য দরকারী ।
আবর বজ্র - বিদ্যুত সহ ঝড়ের সময় গঠিত নাইট্রোজেন অক্সাইড বৃষ্টির পানির সাথে মিশে গিয়ে নাইট্রিক এসিডের খুবই তরল একটি দ্রবণ তৈরি করে । এভাবে বাতাসের এক উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ অকার্যকর নাইট্রোজেনের উপাদান নাইট্রোজেন যৌগে রূপান্তরিত হয় এবং উদ্ভিদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য মাটিতে সঞ্চিত থাকে ।
সুতরাং দেখা যায় যে, বজ্র বিদ্যুতের এই উপকারী অবদান ব্যতীত নাইট্রোজেন চক্রের এই অন্যতম উৎস বজায় রাখা সম্ভবপর হত না এবং পরিনামে উদ্ভিদ জগত ক্ষতিগ্রস্থ হত । তাহলে দেখা যায় ভীতিকর বজ্র - বিদ্যুৎ সত্যিকার অর্থেই ভরসার সঞ্চার করে ।
আর এটা আল্লাহতাআলার মহান করুণা ছাড়া আর কিছুই নয়
Comments
Post a Comment